Daily Ittefaq Daily Ittefaq | সারাদেশ

দিপুকে চাকরিতে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়: র‍্যাব

প্রকাশিত হয়েছে: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৭:৪০ অপরাহ্ণ
দিপুকে চাকরিতে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়: র‍্যাব
ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস (২৭) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় কারখানার দুইজনসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় দিপুর ছোট ভাই অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ র‍্যাব-১৪-এর সদর সপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সাতজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়। তাছাড়া পৃথক অভিযানে আরও তিনজনকে গেপ্তারের তথ্য জানায় পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), মো. আজমল হাসান সগীর (২৬), মো. শাহিন মিয়া (১৯), মো. নাজমুল (২১), ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আলমগীর হোসেন (৩৮), কোয়ালিটি ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।

তাদের মধ্যে আজমল হাসান সগীর, শাহিন মিয়া ও মো. নাজমুলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বাকি সাতজন র‌্যাবের অভিযানে ধরা পড়েন।

র‍্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নাইমূল হাসান বলেন, ভিডিও ফুটেজ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে কারখানার দুজনও রয়েছেন। কারণ ঘটনার সূত্রপাত হয় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে। তখন ফ্যাক্টরির ফ্লোর ইনচার্জ তাকে (দিপু) ইস্তফা দিতে বাধ্য করেন এবং ইস্তফা দেওয়ার পরে উত্তেজিত জনতার কাছে তাকে হ্যান্ডওভার করে দেয়। কেন পুলিশকে হস্তান্তর না করে তাদের (উত্তেজিত জনতা) হাতে তাকে হস্তান্তর করা হলো, কেন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি- তাই কারখানার দুজনকেও গ্রেপ্তার করেছি। এই ঘটনায় অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে দিপুর ছোট ভাই ভালুকা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।



jwARI.fetch( $( "#ari-image-jw6946a86b827c0" ) );

তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার চেষ্টা করেছি জানার জন্য; যে কাকে বলেছে? কী বলেছে? এটা কিন্তু কেউ বলতে পারেনি। কিন্তু একটা লোককে এই অভিযোগে হত্যা করা এবং গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে আগুন দেওয়া এটা কোনোভাবেই আইনে কাভার করে না।

এদিকে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তা‌রদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে নিহতের বাবা রবি চন্দ্র দাস ও বোন চম্পা দাসের দাবি, উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে দিপুকে মিথ্যা অপবাদে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি, দিপু শিক্ষিত এবং সচেতন ছিলেন, তিনি এমন কাজ (ধর্ম অবমাননা) করতে পারেন না।

ৎময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার ‘পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড’ কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপুকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে তার মরদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে মর্গে পাঠায়।