Daily Ittefaq Daily Ittefaq | সারাদেশ

পাটগ্রাম সীমান্তে বাঘ আতঙ্ক

প্রকাশিত হয়েছে: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৮:৩৫ অপরাহ্ণ
পাটগ্রাম সীমান্তে বাঘ আতঙ্ক
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম সীমান্ত ভারত থেকে বাঘ চলে আসতে পারে— এমন খবরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার জনগণকে বিশেষভাবে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তের প্রধান পিলার ৮৬৮ নম্বরের ৩ নম্বর উপপিলারসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভারতের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা থানার বালারহাট এলাকা এবং বাংলাদেশের পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ও জোংড়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ককোয়াবাড়ী সীমান্তবর্তী এলাকাটি কাঁটাতারবিহীন হওয়ায় বাঘ প্রবেশে মানুষের সন্দেহ বেড়ে যায়।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ভারতের বালারহাট এলাকার পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চল থেকে একটি বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। ঘটনাটি সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে। হঠাৎ বাঘ লোকালয়ে চলে আসায় ভারতীয় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয়রা হৈচৈ ও চিৎকার শুরু করলে বাঘটি লোকালয় ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনা ভারতের ১৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের শ্রীমুখ ক্যাম্পের টহল দলের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) নাজিরগোমানী ক্যাম্প জানতে পারে। বিষয়টি জানার পরপরই বিজিবি সীমান্ত এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। রাতেই হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে সীমান্তসংলগ্ন গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনে বাইরে না যাওয়া এবং গভীর রাতে চলাচলে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সপ্তাহ আগে ভারতের ওই গ্রামে দুটি বাঘ এসেছিল। স্থানীয় বনবিভাগের সহায়তায় একটি বাঘ আটক করা হয় এবং অপরটিকে স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে বলে জানা গেছে। এসব ঘটনার কারণে সীমান্ত এলাকার মানুষজনের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দেয়।

মোহাম্মদপুর ককোয়াবাড়ী এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন (৫৮) বলেন, ‘এলাকায় কিছু নাই। খালি শুনা যায় বাঘ নাকি বের হয়েছে ভারত থেকে। বিভিন্ন এলাকার আত্মীয়-স্বজন আমাদেরকে কল করে বাঘ বের হয়েছে নাকি। আমরা তো চোখে দেখেনি।’

একই এলাকার আজিজুল ইসলাম (৬০) বলেন, শুনছি নাকি বাঘ আসছে। কিন্তু দেখি নাই। কেউ দেখেনি। খেতে কাজ করি এ কথা শুনে ভয় লাগে।

নাজিরগোমানী বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের (সিও) মোবাইল নম্বরেও একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে বিজিবির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাঘ বাংলাদেশে প্রবেশের কোনো প্রমাণ নেই। কেউ বাঘ দেখেনিও। সতর্কতার অংশ হিসেবে সীমান্তবাসীদের সাবধান থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অতিরঞ্জিত কথা উঠেছে।