Daily Ittefaq Daily Ittefaq | সারাদেশ

নিখোঁজের ২২ দিন পর পুলিশ সদস্যের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত হয়েছে: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৯:০৮ অপরাহ্ণ
নিখোঁজের ২২ দিন পর পুলিশ সদস্যের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
কর্মস্থল থেকে নিজ বাড়ি যশোরের চৌগাছায় ছুটিতে এসে নিখোঁজ ছিলেন আক্তারুজ্জামান (৪৬) নামে এক পুলিশ সদস্য। নিখোঁজের ২২ দিন পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের নয়মাইল গ্রামের একটি আখক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সর্বশেষ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার হলেও শুক্রবার তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, আক্তারুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি পরিবারকে জানানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে এই খবর পেয়ে মরদেহ আনার জন্য পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আক্তারুজ্জামান খুলনা রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জামলতা গ্রামে। গত ২৮ নভেম্বর আক্তারুজ্জামান নিখোঁজের জিডি করেন তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার।

নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশের পাঠানো পরনের প্যান্ট, শার্ট, জুতার ছবি দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি মরদেহটি তার বোনের স্বামীর। আমরা ইতোমধ্যে কয়েকজন পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছি। মরদেহ স্থানীয় মর্গে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।’

পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাড়ে ৯ মাইল এলাকায় সুমেত আলীর আখক্ষেত থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। স্থানীয়রা আখক্ষেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। প্রথমে মরদেহটি অজ্ঞাত হলেও পরবর্তীতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পরিচয় শনাক্ত করেন।

পঞ্চগড় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক বেলাল হোসেন জানান, ‘মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। তারা থানায় পৌঁছালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।’

তিনি বলেন, ‘ক্লুলেস মরদেহটি পরিচয় শনাক্তে একমাত্র সূত্র হয় উদ্ধারকৃত মরদেহের আন্ডারওয়ার, যা ছিল পুলিশের লোগো সম্বলিত। সেটি একজন পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তার পরনের প্যান্ট, শার্ট, জুতার ছবি নিহতের স্ত্রীকে নিয়ে দেখালে তিনি তার স্বামীর পোশাক বলে শনাক্ত করেন।’

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু মরদেহটি প্রায় অর্ধগলিত, তাই এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু- তা বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’

যশোরের চৌগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ‘নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শাহিনা আক্তার ২৮ নভেম্বর জিডিতে উল্লেখ করেন, তার স্বামী ২৬ নভেম্বর পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে চৌগাছায় আসেন। ২৭ নভেম্বর সকালে মহেশপুর যাওয়ার কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বাসায় রেখে যান। এরপর আমরা জানতে পারি পুলিশ সদস্যের মরদেহ পঞ্চগড়ে পাওয়া গেছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।’