Daily Ittefaq Daily Ittefaq | বিশ্ব সংবাদ

ইসরায়েলের সঙ্গে আরব আমিরাতের ২৩০ কোটি ডলারের গোপন অস্ত্র চুক্তি

প্রকাশিত হয়েছে: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ
ইসরায়েলের সঙ্গে আরব আমিরাতের ২৩০ কোটি ডলারের গোপন অস্ত্র চুক্তি
সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েলের মধ্যে ২৩০ কোটি ডলার মূল্যের একটি বিশাল ও গোপনীয় সামরিক অস্ত্র চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ফরাসি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম ‘ইন্টেলিজেন্স অনলাইন’। 

ইসরায়েলের খ্যাতনামা অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে সম্পাদিত এই চুক্তিটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা খাতের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক লেনদেন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত মাসে এলবিট সিস্টেমস বিপুল অংকের অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা দিলেও তখন ক্রেতা দেশের নাম প্রকাশ করেনি। তবে ফরাসি সংবাদমাধ্যমটির সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ওই রহস্যময় ক্রেতা রাষ্ট্রটি আসলে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

এই ঐতিহাসিক চুক্তির আওতায় আরব আমিরাত মূলত ইসরায়েলি কোম্পানি এলবিটের তৈরি অত্যন্ত উন্নত ‘জে-মিউজিক’ (J-MUSIC) বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগ্রহ করছে। অত্যাধুনিক লেজার প্রযুক্তি নির্ভর এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি মূলত আগত ক্ষেপণাস্ত্রের সেন্সর অকার্যকর করে দেওয়ার মাধ্যমে আকাশপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।



jwARI.fetch( $( "#ari-image-jw6946664c19429" ) );

চুক্তির একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এই স্পর্শকাতর প্রযুক্তিটি যৌথ প্রকল্পের আওতায় সরাসরি আরব আমিরাতেই উৎপাদিত হবে। ইসরায়েল সরকার ইতিমধ্যে এই প্রযুক্তির স্থানীয় উৎপাদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় অনুমোদন প্রদান করেছে এবং পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় আট বছর সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২০ সালে ঐতিহাসিক ‘আব্রাহাম চুক্তির’ মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে দেশ দুটির মধ্যে প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সহযোগিতার পরিধি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এলবিট সিস্টেমস ইতিমধ্যে আমিরাতে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে এবং দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। 

যদিও সামরিক নিরাপত্তার স্বার্থে এবং স্পর্শকাতর প্রযুক্তির কারণে চুক্তির অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখনো জনসমক্ষে আনা হয়নি, তবুও এই বিশাল অংকের লেনদেনটি মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এদিকে এত বড় মাপের একটি গোপনীয় সামরিক চুক্তি নিয়ে বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফ্যাম এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করে জানিয়েছে যে, এসব উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। 

যদিও আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে, তবুও এখন পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে এই গোপন অস্ত্র চুক্তির বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র: ইন্টেলিজেন্স অনলাইন, মিডল ইস্ট মনিটর