Prothom Alo Prothom Alo | জেলা

ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেঁধে রাখার হুমকি রাকসুর জিএসের

প্রকাশিত হয়েছে: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:২৩ অপরাহ্ণ
ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেঁধে রাখার হুমকি রাকসুর জিএসের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা চাকরি করলে আগামী রোববার থেকে তাঁদের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেঁধে রাখা হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল–পরবর্তী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে গ্রন্থাগারের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমাদের শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভারতের পরিকল্পনায় এবং বাংলাদেশের আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পরিকল্পনার সমন্বয়ে তাঁকে হত্যাযোগ্য করে তোলার জন্য দীর্ঘদিনের যে তাদের আয়োজন ছিল, তারা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে আমরা বলতে পারি। আমরা শুধু এটাই বলতে চাই, আমাদের মধ্য থেকে একজন ইয়াহিয়া সিনওয়ার বিদায় নিল। তাঁর পরবর্তী উত্তরসূরি কিন্তু হাজার হাজার শরিফ ওসমান বিন হাদি এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে তৈরি হচ্ছে, তৈরি আছে এবং আগামী দিনেও তৈরি হবে ইনশা আল্লাহ।’রাকসুর জিএস বলেন, ‘কয়জন হাদির মুখকে তোমরা দমাবা। একটা জিনিস খুব স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে যেই রাজনৈতিক দল লড়াই করবে, তারাই আমাদের বন্ধু। ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে যারা টক শোতে, বিভিন্ন সিনেমায়, বিভিন্ন বক্তৃতায়, বিভিন্ন জায়গায় যারা তাদের পক্ষে নমনীয়তা উৎপাদন করবে, আমরা তাদের জুতা খুলে মুখে মারব ইনশা আল্লাহ। তাদের প্রতি ন্যূনতম নমনীয়তা দেখানোর কোনো সুযোগ নাই।’

সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘একটা একটা লীগ ধরে ধরে আজকে এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে আমরা ঘোষণা দিচ্ছি। রাকসু ঘোষণা দিচ্ছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কোনো শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি চাকরি করে, তাদের আগামী রোববার থেকে কলার ধরে টেনে টেনে আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেঁধে রাখব ইনশা আল্লাহ।’রাকসুর ভিপি ও শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) বলেন, ‘হাদিকে নয়, পুরো বাংলাদেশকে গুলি করা হয়েছে। ইনসাফের সংগ্রাম থামবে না। যারা ভাবে একটি হত্যার মাধ্যমে আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে, তারা ভুল করছে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন। বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে জড়ো হয়। পরে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক হয়ে মিছিলটি নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। একপর্যায়ে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেঙে সেখানে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের ঘোষণা দেন। পরে বুলডোজার দিয়ে কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।